শ্রেষ্ঠ গল্প

300.00৳ 


‘অতসী মামী’ গল্প লিখে ১৯২৮ সালে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেছিলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু তারপর আর ফিরে তাকাননি। লেখাপড়া শেষ করলেন না (কিন্তু বিজ্ঞানের ছাত্র মানিক বিজ্ঞানমানসতা বহন করে গেলেন, এমনকি ঘোড়দৌড়ের মাঠেও একটি কোনো গোপন অঙ্কের কারসাজির সন্ধানে ছিলেন তিনি); কোনো নিয়মিত জীবিকার দায় বহন করলেন না (বছর দু-তিনেকের চাকরি, প্রেসের একটি ব্যর্থ ব্যবসা), নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিবেদন করলেন সাহিত্যে; মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান এসে আশ্রয় গ্রহণ করলেন বস্তিতে। এমন নিষ্কাম একাগ্র সন্ধিৎসু সাহিত্যসাধনা দুর্লভ।
‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘পুতুলনাচের ইতিকথা, এই দুটি উপন্যাসই তাঁকে কিংবদন্তীর লেখকে পরিণত করেছে; কিন্তু উপন্যাসের পর উপন্যাসে তিনি যে দরোজার পর দরোজা খুলে দিয়েছেন তা থেকে গেছে অনালোচিত। প্রাগৈতিহাসিক গল্প সাহিত্যপাঠক মাত্রেরই সুপরিচিত; কিন্তু আরো অজস্র গল্পে তাঁর যে-সিদ্ধি তা অজ্ঞাতই থেকে গেছে। উপন্যাসে ও ছোটোগল্পে মানিকের অন্তরাত্মা ক্রমউন্মোচিত ক্রমবিকশিত। তাঁর সাফল্যের কোনো এভারেস্ট নেই, আছে অনেকগুলি শিখর।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাত্র ৪৮-বছরের জীবনে তেমন-কোনো বৈচিত্র্য ছিলো না, কিন্তু এককত্ব ছিলো : নিজে যে চাকরির আবেদন করেন, সেখানে লেখেন, আমি অবগত আছি শ্রীপরিমল গোস্বামী এই পদটির জন্য আবেদন করিবেন। আমার চেয়েও তাঁহার চাকুরির প্রয়োজন বেশি।’; তাঁর জীবনেতিহাসে কোনো একটিমাত্র বন্ধুরও সংস্রবের কথা পাওয়া যায় না; কোনো গ্রন্থ কাউকে উৎসর্গ করেননি (একটিমাত্র উৎসর্গিত গ্রন্থ সম্প্রদায়নির্বিশেষে জনগণের উদ্দেশে নিবেদিত)। ১৯৪৪ সালে কমুনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন; কিন্তু পার্টির নির্দেশ মানেননি, সেখানেও ছিলেন মুক্ত ও স্বাধীন।
বছর-বছর বই বেরিয়েছে তাঁর সমকালীন শ্রেষ্ঠ পত্রপত্রিকায় লিখেছেন; বেতারে অংশগ্রহণ করেছেন; তাঁর গল্প-উপন্যাস তাঁর জীবদ্দশাতেই অনূদিত হয়েছে বিভিন্ন ভাষায়-কোনো কোনোটি চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন; দু-একটি নাটক; ডায়েরি;-কিন্তু তাঁর কেন্দ্রীয় সত্তা উজাড় করে দিয়েছেন তাঁর গল্পে ও উপন্যাসে। গল্প ও উপন্যাসই ছিলো তাঁর মূল মাধ্যম।
কোনো পুরস্কার না-পেলেও একেবারে অপুরস্কৃত থাকেননি। ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম সমালোচক; সঞ্জয় ভট্টাচার্য ‘পূর্বাশা’ পত্রিকায় তাঁর ‘পদ্মানদীর মাঝি’ ধারাবাহিক প্রকাশ করেছেন; তাঁর ইংরেজিতে অনূদিত গল্পগ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন অতুলচন্দ্র গুপ্ত; আবু সয়ীদ আইয়ুব ও বুদ্ধদেব বসু তাঁর গ্রন্থ পর্যালোচনা করেছেন; তাঁকে গুরুত্ব দিয়েছেন জীবনানন্দ দাশ ও বিষ্ণু দে।
তিন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রথম প্রবন্ধ লিখেছিলেন জীবনানন্দ দাশ। উপন্যাসই ছিলো ঐ প্রবন্ধের প্রধান বিবেচ্য। ঐ প্রবন্ধে, এবং অন্যত্র, অকথিত থাকে এই তথ্য যে, তারাশঙ্কর ও বিভূতিভূষণের ছোটোগল্প মানিকের তুলনায় অকিঞ্চিৎকর। উপন্যাসে যেমন, তেম্নি ছোটোগল্পেও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এক অনন্য অধীশ্বর। ১৯৫০-এ, মানিকের জীবদ্দশায়, যে-১৮টি গল্প নিয়ে তাঁর ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ বেরিয়েছিলো, স্বভাবতই তার আহরণক্ষেত্র ছিলো সংকীর্ণ। এখন দূরের পরিপ্রেক্ষিতের সুবিধায় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্টিমুখর তিন দশকে রচিত তিন শতাধিক গল্প থেকে নির্বাচন করে সযত্নে সংকলিত ও সম্পাদিত হয়েছে এই ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ | সম্পাদনা করেছেন মানিক-গবেষক
আবদুল মান্নান সৈয়দ

3 in stock

SKU: Abosar Prokashana Sangstha_333 Categories: ,

Book Details

Weight0.5 kg
Publisher

Abosor অবসর

Reviews

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.