একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ একজন সেক্টর কমান্ডারের স্মৃতিকথা

160.00৳ 


অসীম সাহসী স্বাধীনচেতা এই মানুষটির জন্ম ২৪ মার্চ ১৯২৫ সালে। পিতার নাম খান সাহেব কাজী সদরুলওলা, মাতার নাম রতুবুন্নেসা। কলকাতা সেন্ট-জেভিয়ার্স কলেজের কেমিস্ট্রির ছাত্র থাকা অবস্থায় অনার্স পরীক্ষা শেষ করেই বাবার অমতে তিনি ১৯৪৩ সালে নেভিতে ভর্তি হন। নেভিতে চাকরিরত অবস্থায় ব্রিটিশ অফিসারদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ ঘটায় দু-দুবার কোর্ট মার্শাল হয়; অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার কারণে সেই কোর্ট মার্শাল থেকে তিনি রেহাই পান। ১৯৪৬ সালে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর আহ্বানে নেভি থেকে সেনাবাহিনীতে ট্রান্সফার নেন।
১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল আর্টিলারি স্কুল থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে কাশ্মির যুদ্ধে জেলাম সেক্টরে যোগদান করেন। ১৯৫০ সালে ক্যাডেট ট্রেনিং স্কুলে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ১৯৫৬ সালে মেজর হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে স্টাফ কলেজে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে অধ্যয়ন শেষে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান করে নি। এবং ভবিষ্যতেও যুদ্ধ দিয়ে কোনো রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ১৯৬২ সালে ইপিআইডিসিতে বদলি হয়ে আসেন। এখানেও পশ্চিম পাকিস্তানি আমলাদের সাথে তার মতবিরোধ দেখা দেয়। আমলাদের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়ে তিনি ১৯৬৯ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন এবং ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। কর্নেল কাজী নূর-উজ্জামান। আর্মিতে চাকরিকালীন সময় থেকেই বিশেষ করে ১৯৬২ সাল থেকে এদেশের প্রগতিশীল শিক্ষক চিন্তাবিদ লেখক বুদ্ধিজীবীদের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ড. আহমদ শরীফ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টির ডিন তখন থেকেই কাজী নূর-উজ্জামান ড. আহমদ শরীফের স্বাতন্ত্র-বৈশিষ্ট্যের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং তাঁর সান্নিধ্যে আসেন। ড. আহমদ শরীফের সমাজচিন্তা, স্পষ্টবাদিতা এবং চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য তিনি তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। ড. শরীফ প্রতিষ্ঠিত স্বদেশ চিন্তা সঙের সাথেও তিনি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়ে ড. আহমদ শরীফের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করেছেন। কর্নেল কাজী নূর-উজ্জামান বীরউত্তম সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একসময় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখেছেন।
কর্নেল (অব.) কাজী নুর-উজ্জামান একজন প্রতিবাদী মানুষ। দেশী-বিদেশী সকল প্রতিক্রিয়াশীল বিরোধী আন্দোলন-সগ্রামে তার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আন্দোলনকামী জনতাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ লেখক শিবির-এর অন্যতম সদস্য, ছিলেন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ফ্রন্টের অগ্রভাগে। কর্নেল (অব.) কাজী নূর-উজ্জামান বীরউত্তমকে আহ্বায়ক করে প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনগুলো গড়ে তুলেছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক কমিটি। ১৯৮৫ সালে গঠিত মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কর্নেল (অব.) কাজী নূর-উজ্জামান বীরউত্তম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় কমিটি আয়োজিত গণআদালতের অন্যতম বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন এই সাহসী যোদ্ধা। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে। সাপ্তাহিক নয়াপদধ্বনি। একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক কর্নেল (অব.) কাজী নূর-উজ্জামান বীরউত্তম।
তার রচিত গ্রন্থসমূহ–মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনীতি, বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতি এবং স্বদেশ চিন্তা সুধীজন কর্তৃক সমাদৃত।

3 in stock

SKU: Abosar Prokashana Sangstha_321 Categories: ,

Book Details

Weight0.25 kg
Publisher

Abosor অবসর

Reviews

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.