Book Details
Weight | 0.35 kg |
---|---|
Publisher |
Abosor অবসর |
160.00৳
নবকুমার অকস্মাৎ এইরূপ দুর্গমমধ্যে দৈবী মূর্ত্তি দেখিয়া নিস্পন্দশরীর হইয়া দাঁড়াইলেন। তাঁহার বাক্শক্তি রহিত হইল; ─স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া রহিলেন। রমণীও স্পন্দনহীন, অনিমেষলোচনে বিশাল চুর স্থিরদৃষ্টি নবকুমারের মুখে ন্যস্ত করিয়া রাখিলেন। উভয়মধ্যে প্রভেদ এই যে, নবকুমারের দৃষ্টি চমকিত লোকের দৃষ্টির ন্যায়, রমণীর দৃষ্টিতে সে লণ কিছুমাত্র নাই, কিন্তু তাহাতে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ হইতেছিল।
অনন্তর সমুদ্রের জনহীন তীরে, এইরূপে বহুণ দুই জনে চাহিয়া রহিলেন। অনেকণ পরে তরুণীর কণ্ঠস্বর শুনা গেল। তিনি অতি মৃদুস্বরে কহিলেন, “পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?”
এই কণ্ঠস্বরের সঙ্গে নবকুমারের হৃদয়বীণা বাজিয়া উঠিল। বিচিত্র হৃদয়যন্ত্রের তন্ত্রীচয় সময়ে সময়ে এরূপ লয়হীন হইয়া থাকে যে, যত যত্ন করা যায়, কিছুতেই পরস্পর মিলিত হয় না। কিন্তু একটি শব্দে, একটি রমণীকণ্ঠসম্ভূত স্বরে সংশোধিত হইয়া যায়। সকলই লয়বিশিষ্ট হয়। সংসারযাত্রা সেই অবধি সুখময় সঙ্গীতপ্রবাহ বলিয়া রোধ হয়।
সংসারের প্রতি নিরাসক্তিই কপালকুণ্ডলার জীবনের ট্রাজেডির মূলবীজ, আর নবকুমারের ট্রাজেডির বীজ রয়েছে কপালকুণ্ডলার রূপোন্মত্ততায়। পরিণামে দুজনই প্রবল স্রােতে অতলে হারিয়ে গেছে। বঙ্কিমচন্দ্র মানুষের জয় দেখাতে পারেননি, প্রকৃতিরই জয় দেখিয়েছেন এবং প্রকৃতির কাছে মানুষ যে কত অসহায়, সেই অসহায় মানুষেরই জীবনভাষ্য ‘কপালকুণ্ডলা’।
Weight | 0.35 kg |
---|---|
Publisher |
Abosor অবসর |
Reviews
There are no reviews yet.
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.