হাঁসুলী বাঁকের উপকথা

240.00৳ 


‘তারাশঙ্কর জীবনের বহুমুখিতা খুঁজেছিলেন সামাজিক বহির্জীবনে। ব্যক্তিকে অবলম্বন করে মানব-অস্তিত্বের জটিল প্রহেলিকাময় অলিগলির মধ্যে ঢুকতে চান নি। জীবনের যৌথ সামাজিক প্রত্যক্ষগোচর রূপটিকেই তিনি বিচার করে দেখতে চেয়েছেন তাঁর সাহিত্যে। তাঁর মতো আর কোনো বাঙালি সাহিত্যিক এত দীর্ঘ জটবাঁধা গ্রাম-জীবনের পথে হাঁটেন নি।’ তাঁর ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’ বেরোয় ১৯৪৭-এ। এই উপন্যাসের সূত্রে আমরা বাংলা উপন্যাসের আলাদা মানচিত্রে, আলাদা ভূগোলে গিয়ে পৌঁছুই। ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’য় উঠে এসেছে লোকায়তিক জগতের অতলে লুকিয়ে থাকা এক আদিম সমাজচিত্র। কোপাই নদীর প্রায় বৃত্তাকার বাঁক, মেয়েদের গলার হাঁসুলীর মতো সেই বাঁকে নিবিড়-নিñিদ্র বাঁশবন, বেতবন। সূর্যের আলো সেখানে ঢোকার পথ পায় না। এইখানে বাঁশবাঁদির কাহারদের বসবাস। লৌকিক দেবতা অপদেবতার নির্দেশে চলে কাহারদের সমাজ। কুসংস্কার, লোকবিশ্বাস, প্রথা, রীতি, করণ-কারণ-বজ্রের মতো কঠিন অনুশাসন মানুষের সমস্ত আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। সমাজবিজ্ঞানীর নিষ্ঠায় রাঢ়ের এই প্রান্তবাসী, অন্ত্যজ, অস্পৃশ্য সমাজের ছবি এঁকেছেন তারাশঙ্কর। আমরা দেখছি, বাঁশবাঁদির অন্ধকার হালকা হচ্ছে, কাহারদের ‘বাবার থান’ একালের কাহার-যুবক করালীর হাতে ভূমিশায়ী হচ্ছে, দেবতার জায়গায় বেরিয়ে আসছে দগ্ধ চন্দ্রবোড়া সাপ। দেখতে পাচ্ছি, বাবুদের জমিতে বাঁধা কাহারদের কিছুতেই আর জমির সঙ্গে আটকে রাখা যাচ্ছে না। যোগাযোগের জন্য লোহার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে, চটকল বসছে, কারখানা তৈরি হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, মুছে যাবে, উবে যাবে কাহারদের বাঁশবাঁদি। তাদের নেতা কোশকেঁধে বনওয়ারীর পতন ঘটবে, উত্থান ঘটবে নতুন কালের নেতা করালীর। এই পূর্ণচিত্র আঁকতে গিয়ে তারাশঙ্কর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলেছেন পুরোনোর বিদায়ে, আবাহনও জানিয়েছেন নতুন কালকে।

3 in stock

SKU: Abosar Prokashana Sangstha_76 Categories: ,

Book Details

Weight0.5 kg
Publisher

Abosor অবসর

Reviews

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.