Biography

Author Picture

হুমায়ুন আহমেদ

13 November 1948

হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ - ১৯ জুলাই ২০১২)[৩][৪] ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত।

ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন এবং নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিমার রসায়ন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।[৫] হুমায়ূন আহমেদ রচিত প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে, ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয়। সত্তর দশকের সময় থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তার গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। তার অভূতপূর্ব সৃষ্টি হিমু এবং মিসির আলি ও শুভ্র চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। বিজ্ঞান কল্পকাহিনীও তার সৃষ্টিকর্মের অন্তর্গত, তার রচিত প্রথম বিজ্ঞান কল্পকাহিনী তোমাদের জন্য ভালোবাসা। তার টেলিভিশন নাটকসমূহ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। সংখ্যায় বেশি না হলেও তার রচিত গানগুলোও জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার রচিত অন্যতম উপন্যাসসমূহ হলো মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া, লীলাবতী, কবি, বাদশাহ নামদার ইত্যাদি। বাংলা সাহিত্যের উপন্যাস শাখায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি প্রদত্ত বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তার অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো সর্ব সাধারণ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। ১৯৯৪-এ তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক আগুনের পরশমণি মুক্তি লাভ করে। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ আটটি পুরস্কার লাভ করে। তার নির্মিত অন্যান্য সমাদৃত চলচ্চিত্রগুলো হলো শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), দুই দুয়ারী (২০০০), শ্যামল ছায়া (২০০৪), ও ঘেটু পুত্র কমলা (২০১২)। শ্যামল ছায়া ও ঘেটু পুত্র কমলা চলচ্চিত্র দুটি বাংলাদেশ থেকে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কারের জন্য দাখিল করা হয়েছিল। এছাড়া ঘেটু পুত্র কমলা চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

No products were found matching your selection.